শারীরিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ম্যনুয়াল (বিস্তারিত)

শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো মানুষের সার্বিক বিকাশ ঘটানো অর্থাৎ শারীরিক শিক্ষার ক্রিয়াকলাপে অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে মানুষের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক গুনাবলীর বিকাশ ঘটানো।
শারীরিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ম্যনুয়াল
শারীরিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ম্যনুয়াল

প্রশিক্ষণ কর্মশিবিরের উদ্দেশ্য:
১। প্রাথমিক স্তরের শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিখনক্রম সম্পর্কে অবহিত করণ।
২। প্রাথমিক স্তরের শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের চিহ্নিত সমস্যামূলক বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা স্পষ্টকরণ।
৩। শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক ধারণা উপস্থাপনের কৌশল অবহিত হয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রয়োগের দক্ষতা অর্জন।
৪। শিক্ষার্থীদের নিকট শারীরিক শিক্ষা ভীতি/ অনীহা দূর করে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক পাঠ আকর্ষণীয় ও আনন্দদায়ক করে তোলার কৌশল আয়ত্বকরণ।

প্রশিক্ষণ কর্মশিবিরের নিয়মাবলি:
১। সময়ানুবর্তি হওয়া
২। কর্ম তৎপর হওয়া
৩। দায়িত্বশীল আচরণ করা
৪। প্রশ্ন করতে হলে হাত তোলা
৫। স্পষ্ট করে শুদ্ধ উচ্চারণে বক্তব্য পেশ করা
৬। অন্যের মতামতের উপর গুরুত্ব দেওয়া
৭। সুচিন্তিত মতামত প্রদান করা
৮। অন্য কেহ কথা বলার সময় নিজে কথা না বলা
৯। প্রশিক্ষণ চলাকালীন কক্ষে অযথা ঘোরাফেরা না করা
১০। প্রশিক্ষণের পরিবেশ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখা
১১। মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা
১২। নেইম কার্ড লাগানো

শারীরিক শিক্ষার  ম্যানুয়ালটির ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।

প্রাক-মূল্যায়ন: 
সময় : ১৫ মিনিট
নাম :----------------------------        রেজি নং :--------------------------------

[নিম্নের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর ডানপাশের খালি জায়গায় লিখবেন। প্রয়োজনে আলাদা কাগজ ব্যবহার করতে পারেন।]


১।  প্রাথমিক স্তরে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের প্রান্তিক যোগ্যতা কয়টি ?
২।  প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সমাবেশের জন্য কত সময় রয়েছে ?
৩।  মার্চপাস্ট-এ কীভাবে সালাম প্রদান করতে হয় ?
৪।  একীভ‚ত শিক্ষা বলতে কী বুঝায় ?
৫।  গাঠনিক মূল্যায়ন কী ?
৬।  চারটি মাইনর গেইম এর নাম লিখ ?
৭।  মুক্ত হস্তের ব্যায়াম বলতে কী বুঝায় ?
৮।  অ্যাথলেটিক্স কোন ধরনের গেইম ?
৯। ফুটবল খেলার মাঠের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত মিটার ?
১০। স্বাস্থ্য শিক্ষা বলতে কী বুঝায় ?



শারীরিক শিক্ষা শিক্ষাক্রম প্রণয়ন প্রক্রিয়া
শারীরিক শিক্ষা শিক্ষাক্রম প্রণয়ন প্রক্রিয়া



শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রান্তিক যোগ্যতাসমূহ :
২৫. শরীরচর্চা ও খেলাধুলার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধন। 
২৬. নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর  জীবন যাপনে সচেষ্ট হওয়া।

শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের প্রান্তিক যোগ্যতা:

ব্যক্তিগত ও  পারিপার্শ্বিক পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের অভ্যাস গড়ে তোলা ও পরিবেশ
উন্নয়নে আগ্রহী হওয়া।
খেলাধুলার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধন
ছন্দময় ব্যায়াম ও নাচের মাধ্যমে শিশুদের চিত্তবিনোদন, কল্পনাশক্তি, সৃজনশীলতা ও বুদ্ধির বিকাশ।
শৃঙ্খলা বোধ, নেতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, নেতার আদেশ মেনে চলা, সহনশীলতা ও নেতৃত্বদানের গুনাবলি অর্জন
করা।
পরিমিত খেলাধুলা, বিশ্রাম ও ঘুমের মাধ্যমে সুস্থদেহ ও সুন্দর মন গড়ে তোলা।
দেহ গঠন ও স্বাস্থ্য রক্ষায় খাদ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে জানা এবং এরূপ খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তোলা।
নিরাপদ জীবন-যাপনের লক্ষ্যে দৈনন্দিন জীবনে দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সর্তকতামূলক ব্যবস্থাদি সম্পর্কে জানা।
প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা এবং বাস্তবে এর প্রয়োগ সম্পর্কে জানা।
দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধে উদ্দীপ্ত হওয়া।
১০ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ববোধ ও প্রতিযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলা।


স্বাস্থ্য কী: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রদত্ত সংজ্ঞা-
ঐবধঃয রং ংঃধঃব ড়ভ পড়সঢ়ষবঃব ঢ়যুংরপধষ, সবহঃধষ ্ ংড়পরধষ বিষষ নবরহম ্ হড়ঃ সবৎবষু ঃযব ধনংবহপব ড়ভ ফরংবধংব.   অর্থাৎ শুধু রোগ প্রতিরোধ নয়, সমাজের মঙ্গল এবং শারীরিক ও মানসিক পূর্ণাঙ্গ উন্নতিই হল স্বাস্থ্য।
শারীরিক শিক্ষা কী:
শিক্ষার ধারণার সাথে শারীরিক শিক্ষার ধারণাটিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ‘শারীরিক শিক্ষা’ বিষয়টি বোঝার জন্য ‘শারীরিক’ শব্দটির চেয়ে ‘শিক্ষা’ শব্দটির উপর বেশি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনে অন্যতম মাধ্যম হিসাবে কাজ করে শারীরিক শিক্ষা। শারীরিক শিক্ষার পথ পরিক্রমা বিশ্লে¬ষণ করে শারীরিক শিক্ষার দুইটি ভিন্ন তত্ত¡ পাওয়া যায়। যার একটি ‘শরীরের জন্য শিক্ষা’ আর অন্যটি ‘শরীরের মাধ্যমে শিক্ষা’।

মধ্যযুগীয় দ্বৈতবাদ মতানুসারে মানবসত্তার দুইটি দিক শরীর ও মন। এ মতানুসারে শিক্ষা মানুষের মানসিক দিকের আর শারীরিক শিক্ষা শারীরিক দিকের উন্নতি ঘটায়। বিভিন্ন প্রয়োজনে মানব সন্তানকে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক,আধ্যাত্মিক প্রভৃতি ভাগে ভাগ করলেও এ সমস্ত দিকগুলি একটি অন্যটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই কেবলমাত্র শারীরিক উন্নতির জন্য শারীরিক শিক্ষাকে নির্ধারণ করা যথার্থ হবে না।

‘শরীরের মাধ্যমে শিক্ষা’ এটি শারীরিক শিক্ষার আধুনিক মতবাদ হিসাবে স্বীকৃত। মানব সত্তার সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্ধারিত শারীরিক কার্যকলাপ কেন্দ্রিক শিক্ষাই শারীরিক শিক্ষা। 

খেলাধুলা বা অনুরুপ শরীরকেন্দ্রিক কার্যকলাপকে শারীরিক শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা হয়। খেলাধুলা শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মানসিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। শারীরিক শিক্ষা কেবলমাত্র শরীরের জন্য শিক্ষা নয়, ব্যক্তির সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শরীরের মাধ্যমে যে শিক্ষা অর্জিত হয় তাই শারীরিক শিক্ষা। যেহেতু শিশুরা স্বাভাবিকভাবে খেলাধুলাতে আকৃষ্ট হয় সেহেতু শারীরিক শিক্ষা শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে শিশুদের নিকট আকর্ষণীয়।
সি এ বিউকার এর মতে ‘ শারীরিক শিক্ষা হলো শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং শারীরিক শিক্ষা সুনির্বাচিত শারীরিক কার্যক্রমের মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক দিক দিয়ে উপযুক্ত নাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে পৌঁছানোর এক প্রচেষ্ঠা মাত্র’।

শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা :
শারীরিক শিক্ষার মধ্যে শিক্ষার্থীর সর্বতোমুখী উন্নতির দিকটি বিশেষভাবে বিদ্যমান। শিক্ষাবিদ ম্যাসলোর মতে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজন তিনটি স্তরে সাজানো।

শারীরিক প্রয়োজন :  শারীরিক শিক্ষা শিক্ষার্থীকে শারীরিক কৌশল শেখাতে গিয়ে তার শারীরিক সক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। শিক্ষার্থীর শারীরবৃত্তীয় কার্যক্ষমতার উন্নতি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, দৈহিক গঠন সুন্দর ও মজবুত করে সুস্বাস্থ্যর অধিকারী করে তোলে।

মানসিক প্রয়োজন : শারীরিক শিক্ষা শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার একঘেয়েমি দূর করে জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে। বৌদ্ধিক বিকাশ ও বিশ্লে¬ষণ ক্ষমতার উন্নতি ঘটিয়ে আত্মসচেতনতা, আত্মনির্ভরশীলতা, আত্মউপলব্ধি বাড়িয়ে সৃজনশীলতা ও সৌন্দর্যবোধ জাগ্রত করে। আনন্দদায়ক পরিবেশে শিক্ষার্থীর আবেগ প্রশমিত করে চারিত্রিক গুণাবলির বিকাশ ঘটায়।

সামাজিক প্রয়োজন : কোন ব্যক্তিই সামাজিক হয়ে জন্মায় না। পরিবেশ তাকে সামাজিক করে তোলে। দলীয় খেলার মাধ্যমে নেতৃত্ত¡ দানের ক্ষমতা, সহযোগিতার মনোভাব, ভ্রাতৃত্ববোধ ও গণতান্ত্রিক চেতনা জাগরিত হয়। বিভিন্ন দেশ ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হয়ে সামাজিক রীতিনীতি জানার মধ্য দিয়ে সামাজিক ভেদাভেদ দূর করে নিজের জীবনাদর্শে মূল্যবোধের বিকাশ ঘটায়।

খেলাধুলা : 
শারীরিক শিক্ষার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে খেলাধুলা। তবে শুধুমাত্র খেলাধুলাই শারীরিক শিক্ষা নয়। খেলাধুলাকে শারীরিক সক্ষমতার সর্বোচ্চ ও শৈল্পিক প্রদর্শন বলা যেতে পারে। 


শারীরিক শিক্ষার শিক্ষাদান পদ্ধতি:
# শিক্ষাদানের সাধারণ নীতি : শারীরিক শিক্ষা শিক্ষাদানে অনেক সময় শিক্ষকগণের জড়তা, ভীতি বা আগ্রহের ঘাটতি দেখা যায়।  প্রকৃতপক্ষে যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়ে যেকোন শিক্ষকের পক্ষেই শারীরিক শিক্ষা শিক্ষাদান সম্ভব। শারীরিক শিক্ষা সাধারণ শিক্ষা হতে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। শিক্ষাদানের সাধারণ নীতিগুলি মেনেই শারীরিক শিক্ষা শিক্ষাদান করা হয়। শিক্ষাদানের সাধারণ নীতি-

  • সহজ থেকে কঠিন  
  • জানা থেকে অজানা 
  • নিকট থেকে দূর  
  • সমগ্র থেকে অংশ  
  • মূর্ত থেকে অমূর্ত 
  • বিশেষ থেকে সাধারণ 
# প্রদর্শন পদ্ধতি : শিক্ষাদানে কোন বাস্তর ঘটনা, বিষয় বা কৌশল প্রত্যক্ষভাবে উপস্থাপনের প্রক্রিয়াকে প্রদর্শন পদ্ধতি বলা যেতে পারে। প্রদর্শনকে শিক্ষক কেন্দ্রীক সনাতন শিক্ষাদান পদ্ধতির অন্তর্ভূক্ত ধরা হলেও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষাদানে এটি গুরুত্ব বহন করে। উপকরণ সহকারে, মনোজ্ঞ ও আকর্ষণীয় উপস্থাপনায়, শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে এ পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাস্তব অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের সুযোগ দিয়ে কার্যকর শিক্ষাদান সম্ভব। প্রদর্শনের সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের অনুশীলনের সুযোগ দেওয়া আবশ্যক। প্রদর্শন পদ্ধতিতে শিক্ষাদানে নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করা যেতে পারে-
উপকরণসহ শিখন উপযোগী পরিবেশ তৈরি। 
প্রদর্শনের উদ্দেশ্য ও ধাপগুলি পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন।
প্রদর্শন 
প্রদর্শন শেষে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা ও সারসংক্ষেপ টানা। 

# শারীরিক শিক্ষা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যবহারিক কাজ নির্ভর। তত্মীয় অংশের সাথে ব্যবহারিক কাজ করলে শিক্ষাদান অধিক ফলপ্রসূ হবে। একটি পাঠে একই সাথে তত্ত¡ীয় ও ব্যবহারিক কাজ করা যেতে পারে। প্রয়োজনে ক্লাসের কিছু সময় শ্রেণিকক্ষে আবার কিছু সময় মাঠে শিক্ষাদান করা যেতে পারে। 
# ব্যবহারিক কাজের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে হবে। আঘাত বা অন্য কোন কারণে শিক্ষার্থীর মাঝে ভীতির সৃষ্টি হলে পরবর্তীতে ঐ শিক্ষার্থীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। ইনজুরির হাত হতে রক্ষা পেতে শারীরিক কাজের পূর্বে যথাযথ ওয়ার্মিং আপ কার্যক্রম করে নিতে হবে।
STEP FORMAT
            S  স্লেট
            T  টাস্ক
            E  ইক্যুইপমেন্ট
            P  পিপল
উপরের ক্ষেত্রগুলোতে পরিবর্তন এনে অনুশীলন ও প্রতিযোগিতায় বৈচিত্র্য আনা যায়। এছাড়া উল্লেখিত ক্ষেত্রগুলোতে পরিবর্তনের মাধ্যমে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সম্পৃক্ত করে শিক্ষাদান সম্ভব। 
# শারীরিক শিক্ষা শিক্ষাদান ফলপ্রসূ করতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার সাথে, আনন্দময় পরিবেশে, সক্রিয় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষাদান অন্যতম লক্ষ্যনীয় বিষয়। 


শারীরিক শিক্ষা নমুনা পাঠ-পরিকল্পনা

শারীরিক শিক্ষা নমুনা পাঠ-পরিকল্পনা

দৈনিক সমাবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে  এখানে ক্লিক করুন।

দৈনিক সমাবেশ

শারীরিক শিক্ষার মূল্যায়ন সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
শারীরিক শিক্ষার ব্যায়াম সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।

শারীরিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ম্যনুয়াল

প্রাথমিকের জন্য নির্বাচিত মাইনর  গেইমস দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রাথমিকের কাব-স্কাউট সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।

মেজর গেমস-অ্যাথলেটিকস 
পৃথিবীতে যত প্রকার খেলাধুলা আছে তার মধ্যে অ্যাথলেটিকসই সবচেয়ে পুরাতন একটি খেলা। একটি মানব শিশু জন্মের পর থেকে বড় হয়ে উঠা পর্যন্ত দৌড় ঝাপের মধ্য দিয়ে বড় হতে হয়। আদিম যুগে মানুষ বাঁচার তাগিদে দৌড়, লাফ ও নিক্ষেপের আশ্রয় গ্রহণ করত। পরবর্তিকালে মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনে এই দৌড়, ঝাপ ও নিক্ষেপ চিত্ত বিনোদনমূলক ক্রীড়ায় রূপান্তরিত হয়েছে।
ব্যক্তিগত ক্রীড়া নৈপূণ্য প্রদর্শনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে অ্যাথলেটিকস। এই অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থার নাম ইন্টারন্যাশনাল অ্যামেচার অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন সংক্ষেপে আই.এ.এ.এফ (ওঅঅঋ) ১৯১২ সালে ষ্টকহোমে এই সংস্থা গঠিত হয়। এই সংস্থার সদর দপ্তর লন্ডনে। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আই.এ.এ এফ-এর সদস্যপদ লাভ করে। বাংলাদেশ অ্যামেচার অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন (ইঅঅঋ) এই সংস্থাই বাংলাদেশে অ্যাথলেটিকস নিয়ন্ত্রন ও পরিচালনা করে থাকে।
অ্যাথলেটিকস এর ইভেন্টসমূহ :
অ্যাথলেটিকস এর ইভেন্টসমূহকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে।

অ্যাথলেটিকস

ট্র্যাক ইভেন্ট
১. ১০০ মি: প্রিন্ট
২. ২০০ মি: প্রিন্ট
৩. ৪০০ মি: প্রিন্ট
৪. ১০০ মি: হার্ডেল
৫. ১১০ মি: হার্ডেল
৬. ৪০০ মি: হার্ডেল
৭. ৪  ১০০ মি: রিলে
৮. ৪  ৪০০ মি: রিলে
৯. ৮০০ মি: দৌড়
১০. ১৫০০ মি: দৌড়
১১. ৫০০০ মি: দৌড়
১২. ১০,০০০ মি: দৌড়
১৩. ৩০০০ মি: স্টিপল চেজ

ফিল্ড ইভেন্ট
লাফসমূহ
১. দীর্ঘলাফ
২. উচ্চলাফ
৩. ট্রিপল জাম্প
৪. পোলভল্ট

নিক্ষেপসমূহ
১. গোলক নিক্ষেপ
২. চাকতি নিক্ষেপ
৩. বর্শা নিক্ষেপ
৪. হ্যামার নিক্ষেপ

দৌড় প্রতিযোগিতার নিয়মাবলি :
১. দৌড় প্রতিযোগিতার জন্য ৪০০ মিটার ট্র্যাকই আইনসম্মত ট্র্যাক।
২. দৌড়ের সময় অ্যাথলেটগণ বাম হাত ১ম লেনের দিকে রেখে দৌড়াবে।
৩. ¯িপ্রন্ট দৌড়ের সময় লেন পরিবর্তন করা যাবে না।
৪. ¯িপ্রন্ট দৌড়ের জন্য স্টার্টিং বøক ব্যবহার করতে হবে।
৫. দৌড়ের শেষ মাথায় ফিনিশিং স্ট্যান্ড ও ফিতা থাকবে।
৬. ফিনিসিং ফিতার টর্সো আগে টাচ করতে হবে।
৭. দৌড়ের আরম্ভ ও শেষ রেখা সাদা রং দিয়ে চিহ্নিত করতে হবে।
৮. সব দৌড়ের আরম্ভ একই স্থানে হয় না কিন্তু শেষ হয় একই স্থানে।
৯. আরম্ভকারীর পিস্তলের আওয়াজে সব দৌড় শুরু হবে।
১০. একবার ফলস স্টার্ট হলে সে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ যাবে।
১১. প্রিন্ট দৌড়ের সময় আরম্ভকারী তিনটি শব্দ ব্যবহার করবে-
ক. ঙহ ুড়ঁৎ সধৎশং অর্থাৎ আরম্ভ স্থানে যাও।
খ. ঝবঃ অর্থাৎ দৌড় আরম্ভের চুড়ান্ত অবস্থান।
গ. ঋরৎবফ অর্থাৎ পিস্তলের আওয়াজের সাথে সাথে দৌড় শুরু।
১২. দূর পাল্লা দৌড়ের আরম্ভের সময় আরম্ভকারীকে ঝবঃ বলতে হয় না, শুধু ঙহ ুড়ঁৎ সধৎশ বলার পরই বন্দুকের আওয়াজের ও সাথে সাথে দৌড়।

¯িপ্রন্ট দৌড় আরম্ভের কৌশল : সর্বোচ্চ গতি সম্পন্ন দৌড়ই হল প্রিন্ট দৌড়। ১০০ মি: থেকে ৪০০ মি: পর্যন্ত সব দৌড়কে ¯িপ্রন্ট দৌড় বলে। ¯িপ্রন্ট দৌড়ের আরম্ভ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক স্টার্ট হলে বাড়তি সুবিধে পাওয়া যায়।

তিনভাবে স্টার্ট নেওয়া যায়-
১. বাঞ্চ স্টার্ট (Bunch Start), ২. মিডিয়াম স্টার্ট (Medium Start), ৩. অ্যালংগেটেড স্টার্ট (Elongated Start)
১. বাঞ্চ স্টার্ট (Bunch Start) ) : সামনের পা আরম্ভ রেখা থেকে এক পা পিছনে এবং পিছনের পায়ের টিপ সামনের পায়ের হিলের সাথে একই লাইনে থাকবে। মাথা নিচের দিকে থাকবে। ঘাড়ে কোন ভাঁজ পরবে না।
২. মিডিয়াম স্টার্ট (Medium Start) : সামনের পা আরম্ভ থেকে দুই পা পিছনে এবং পিছনের পায়ের হাঁটু ও সামনের পায়ের বল এক লাইনে থাকবে।
৩. অ্যালংগেটেড স্টার্ট (Elongated Start) : সামনের পা আরম্ভ রেখা থেকে তিন পা পিছনে এবং পিছনের পায়ের হাঁটু ও সামনের পায়ের হিল এক লাইনে থাকবে।
লাফ বিভাগ- দীর্ঘলাফ : 
দীর্ঘলাফের নিয়মাবলি : 
১. রানওয়ের ভেতর দিয়ে দৌড়ে আসতে হবে।
২. রানওয়ের দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ৪০ মি:, প্রস্থ ১.২২-১.২৫ মি: উভয় পাশ সাদা রং দিয়ে চিহ্নিত করতে হবে।
৩. টেক অফ বোর্ডের দৈর্ঘ্য ১.২১-১.২২ মি:, চওড়া ১৯.৮ মি:মি: হতে ২০.২ মি:মি:, উচ্চতা- ১০০ মি:মি:।
৪. টেক অফ বোর্ড ল্যান্ডিং এরিয়া থেকে ১-৩ মি: দূরে থাকবে।
৫. টেক অফ বোর্ডের রং হবে সাদা।
৬. জাম্পপিট বালি দ্বারা পরিপূর্ণ থাকবে তবে টেক অফ বোর্ডের উপরে উঠবে না।
৭. জাম্প পিটের মাপ দৈর্ঘ্য ১০ মিটার, প্রস্থ ২.৭৫-৩.০০ মি:।
৮. শরীরের সবচেয়ে পিছনের স্পর্শ থেকে মাপ নিতে হবে।
৯. একজন প্রতিযোগী নিম্নলিখিত কারণে অযোগ্য হবে-
ক. টেক অফ বোর্ডের বাহির দিয়ে লাফ দিলে।
খ. ল্যান্ডিং এরিয়ার বাইরের মাটি স্পর্শ করলে।
গ. লাফ শেষে পিছনের দিকে হেঁটে আসলে।
ঘ. দুপায়ে টেক অফ নিলে।
ঙ. টেক অফ বোর্ডের সামনের মাটি স্পর্শ করলে।
চ. নাম ডাকার ৯০ সেকেন্ডের ভেতর লাফ না দিলে।
উচ্চলাফ : 
উচ্চলাফের নিয়মাবলি :  
১. উচ্চলাফ শুরুর পূর্বে প্রতিযোগীদের লাফের উচ্চতা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। রাউন্ড শেষে কতটুকু উচ্চতা বাড়াবে তা জানাতে হবে।
২. রাউন্ড শেষে ক্রসবার কমপক্ষে ২ সে:মি: উঠাতে হবে।
৩. রানওয়ের দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ১৫ মিটার হবে।
৪. একজন প্রতিযোগী তার সুবিধের জন্য রান আপ ও টেক অফ মিলানোর জন্য একাধিক মার্কার ব্যবহার করতে পারবে।
৫. দু’খুটির মধ্যে দূরত্ব থাকবে ৪.০৪ মিটার।
৬. ক্রসবার ধাতু, কাঠ বা ঐ জাতীয় কোন বস্তু দ্বারা তৈরি হবে। এর দৈর্ঘ্য হবে ৩.৯৮ থেকে ৪.০২ মিটার। ব্যাস ২৯ মি:মি:-৩১ মি:মি:।
৭. উচ্চ লাফের ল্যান্ডিং এরিয়ার মাপ ৫  ৫ মিটার।
৮. একজন প্রতিযোগী কখন একটি সুযোগ হারায়-
ক. লাফ দেওয়ার সময় ক্রসবারের লাইন অতিক্রম করলে।
খ. দুপায়ের টেক অফ নিলে।
গ. লাফ দেওয়ার সময় ক্রসবার পড়ে গেলে।
ঘ. লাফ দিয়ে ক্রসবারের নিচ দিয়ে চলে আসলে।
ঙ. নাম ডাকার ৯০ সেকেন্ডের ভেতর লাফ না দিলে।

অ্যাথলেটিক্সের টাই : টাই (ঞরব) অর্থ সমতা। যখন দুজনের ফলাফল সমান হয় তখন তাকে টাই বলে। টাই দুই রকমের- ১. উচ্চতার টাই  ২. দূরত্বের টাই। 
১. উচ্চতার টাই : পোলভল্ট ও হাইজাম্পে টাই হলে তাকে উচ্চতার টাই বলে। কারণ এদের টাই হয় উচ্চতায়। 
২. দূরত্বের টাই : দীর্ঘলাফ হুপস্টেপ এন্ড জাম্প, চাকতি নিক্ষেপ গোলক নিক্ষেপ, বর্শা নিক্ষেপ, হাতুড়ি নিক্ষেপ এসব ইভেন্টের প্রতিযোগীদের মধ্যে টাই হলে তাকে দূরত্বের টাই বলে। শুধু ১ম স্থানের জন্য টাই ভাঙ্গতে হয়। ২য় ও ৩য় স্থানের জন্য টাই হলে যুগ্মভাবে ফলাফল ঘোষণা করতে হয়। 
১. উচ্চতায় টাই হলে টাই ভাঙ্গার নিয়ম- 
ক) যে উচ্চতায় টাই হয়েছে সে উচ্চতায় যে কম চেষ্টায় অতিক্রম করেছে সে প্রথম হবে। 
খ) উপরের নিয়মে টাই না ভাঙ্গলে ১ম থেকে শেষ পর্যন্ত যার ক্রস কম সে ১ম হবে। 
গ) এর পরেও যদি টাই না ভাঙ্গে তাহলে উচ্চতা বাড়িয়ে বা কমিয়ে লাফ দেওয়াতে হবে যে অতিক্রম করবে সে বিজয়ী হবে। এখানে প্রতিযোগীগণ ১টি করে লাফের সুযোগ পাবে। 

নিম্নে ছক এঁকে দেখান হলো। 
শারীরিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ম্যনুয়াল
এখানে দেখা যাচ্ছে, ১.৯১ মি: উচ্চতা কেউই পার হতে পারেনি। ১.৮৮ মি: উচ্চতা সবাই দ্বিতীয় চেষ্টায় অতিক্রম করেছে। টাই সমাধানের ২নং সূত্র মতে দেখতে হবে ক্রস কম কার। ক্রসও তিনজনের ২টি করে অর্থাৎ ২নং সূত্র মতেও টাই ভাঙ্গছে না। এখন ৩নং সূত্র অনুসরণ করতে হবে। ৩নং সূত্র মতে ঐ তিনজন প্রতিযোগীকে পুনরায় ১টি লাফ দিতে হবে। 
এখানে দেখা যাচ্ছে ১.৮৯ মি: উচ্চতা ক এবং খ অতিক্রম করেছে। এ দুজনের মধ্যে আবার টাই হয়েছে। বার উপরে তুলে ১.৯১ মি: ঐ দুজন ১টি করে লাফ দিয়ে ক অকৃতকার্য হয়েছে এবং খ অতিক্রম করেছে। তাহলে ফলাফল হল। খ-১ম, ক-২য়, গ-৩য় ও ঘ-৪র্থ। 

শারীরিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ম্যনুয়াল
এখানে দেখা যাচ্ছে ১.৯৪ মি: উচ্চতা কেউই অতিক্রম করতে পারেনি। ১.৯২ মি: উচ্চতা সবাই অতিক্রম করেছে তবে ক,খ,গ, করেছে তৃতীয় চেষ্টায় ও ঘ করেছে দ্বিতীয় চেষ্টায়। সুতরাং টাই ভাঙ্গার ১নং সূত্র মতে ঘ ১ম। ক, খ উভয়েই তৃতীয় চেষ্টায় ও ক্রসও সমান সেজন্য দু’জনই দ্বিতীয় হবে কারণ ১ম স্থান ছাড়া অন্য স্থানের জন্য টাই ভাঙ্গা হয় না।  
দূরত্বের টাই হলে টাই ভাঙ্গার নিয়ম : 
ক.  মোট নিক্ষেপ বা লাফের ভিতর ২য় সর্বোচ্চ দূরত্ব দেখতে হবে। 
খ.  এ নিয়মে টাই না ভাঙ্গলে ৩য় সর্বোচ্চ দেখতে হবে। (এভাবে ক্রমান্বয়ে যাবে) নিম্নে ছক এঁকে বুঝানো হল- (দীর্ঘ লাফ) 

শারীরিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ম্যনুয়াল
এখানে দেখা যাচ্ছে গ ও ঘ দুজনেই ৭.৬০ মি: দূরত্ব অতিক্রম করেছে। সূত্র মতে এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূরত্ব দেখতে হবে। গ এর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূরত্ব হল ৭.৫৫ মি: ও ঘ. এর ৭.৫০ মি: সুতরাং গ ১ম ও ঘ ২য় এবং ক ৩য়। 
দীর্ঘলাফ, হুপস্টেপ এন্ড জাম্প, শটপুট, চাকতি, হ্যামার ও বর্শা নিক্ষেপের টাই হলে সব টাই ভাঙ্গার নিয়ম একই।

উচ্চলাফ দেওয়ার পদ্ধতি তিন প্রকার- 
১. ওয়েস্টার্ণ রোল, ২. বেলি রোল, ৩. ফসবেরি ফ্লপ 
১. ওয়েস্টার্ণ রোল : এ পদ্ধতির মূল নীতি হল যে পায়ে টেক অফ নেবে, সেই পা ও দুই হাতের উপরই ল্যান্ডিং হবে। 
ক. সাধারণত ৭/৮ পদক্ষেপ দৌড়ে এসে লাফ দেওয়া হয়। উচ্চতা কম হলে পাঁচ পদক্ষেপই যথেষ্ট। 
খ. লাফানোর জন্য দৌড় শুরু করার সময় ক্রসবারের মাঝে ৪৫-৬০ কোণ করে দাঁড়াতে হবে। 
গ. মাটি ছেড়ে ওঠার সময় শেষের তিনটা পদক্ষেপ দ্রæত এবং অপেক্ষাকৃত লম্বা হবে। 
ঘ. পিছনের পা-কে খুব জোরে উপরের দিকে ছুড়ে দিয়ে যে পায়ের উপর ভর করে মাটি ছাড়তে হবে সেই পায়ের গোড়ালি থেকে পাতার উপর সম্পূর্ণ শরীরটা গড়িয়ে এনে পাকে সোজা করে মাটি ছেড়ে ওপরে উঠাতে হবে। 
ঙ. যে পা দিয়ে মাটি ছাড়া হবে, পরে সেই পায়ের হাঁটু ভেঙ্গে ওপরে তুলতে হবে। 
চ. ক্রসবারের উপর সম্পূর্ণ শরীরটাকে ঘুরিয়ে দিয়ে সে দিকের কাঁধকে ক্রসবারের উপর খাড়াভাবে রেখে ক্রসবার অতিক্রম করবে। 
২. বেলি রোল : এ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য হলো যে পায়ে টেক অফ নিবে তার বিপরীত পা ও দুহাতের উপর ভর করে ল্যান্ডিং করতে হবে। ফোমের উপরে হলে নিজের সুবিধে মত পিঠের ওপরও ল্যান্ডিং করা যায়। এ পদ্ধতিতে মনে রাখতে হবে- 
ক. দৌড়ে আসার কোণ ক্রসবারের সাথে ২৫-৪০ হবে। 
খ. টেক অফের সময় শেষের পদক্ষেপগুলো দ্রæত ও লম্বা হবে। 
গ. ক্রসবারের ওপরে শরীর এলে মাথা নিচের দিকে ঝুঁকিয়ে দিতে হবে। যাতে পেটের দিকটাকে ক্রসবারের কাছাকাছি রাখা যায়। 
ঘ. যে হাত ও পা প্রথমে নামছে সে দিকের দেহের উপরের অংশ (কাধ থেকে কোমড় পর্যন্ত) মাটিতে নামিয়ে হাত দেহের ভিতরের দিকে ঠেলে দিয়ে গড়িয়ে দিতে হবে। 
৩. ফসবেরি ফ্লপ : ফসবেরি ফ্লপ বর্তমানে এটা সর্বজনীন পদ্ধতি। তবে মনে রাখতে হবে ফোম ছাড়া এ পদ্ধতিতে লাফ দেওয়া সম্ভব নয়।   
ক.  ক্রসবারের সাথে ৯০ কোণ করে দাঁড়িয়ে দৌড় শুরু করতে হবে এবং অর্ধবৃত্তনুসারে ক্রসবারের কাছে আসতে হবে। 
খ.  শরীরের মাঝখানটাকে পিছন দিকে ঝুঁকিয়ে দিয়ে টেক অফ পা দেহের ভর কেন্দ্রের সামনে রাখতে হবে। এরপর দ্রæত জোরের সাথে ও পরের দিকে উঠতে হবে। একই সাথে অপর পা টাকে দুলিয়ে উপরে ডান কাঁধের লাইনে নিয়ে যেতে হবে। এর ফলে পিঠ ক্রসবারের দিকে আসবে। 
গ.  দেহ মাটি ছেড়ে যখনই ওপরে উঠবে, সাথে সাথে হাত দুটো পাশে দেহের সমান্তরালে এনে মাথা, শরীর ও কোমরের নিচের অংশ ক্রসবারের উপর দিয়ে পার করতে হবে। হাত ও পা দুটো উপরের দিকে থাকবে এবং পিঠের ওপর অবতরন করবে। 
শারীরিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ম্যনুয়াল
গ. নিক্ষেপ বিভাগ- গোলক নিক্ষেপ : গোলকটি লোহা, পিতল বা ঐ জাতীয় কোনো বস্তু দ্বারা তৈরি হবে। আকৃতি গোলাকার এবং মসৃণ হবে। গোলকের ওজন পুরুষদের জন্য ৭.২৬০ কেজি, মহিলাদের জন্য ৪ কেজি। গোলক নিক্ষেপ সার্কেলের ব্যাস হবে ২.১৩৫ মি: এবং সেক্টরের কোণ হবে ৩৪ - ৯২। একটি বাঁকানো কাঠ বৃত্তের সামনে দাগের উপর বসাতে হবে যার নাম স্টপ বোর্ড। স্টপ বোর্ডটি সাদা রংয়ের হবে এবং মাটির সাথে শক্তভাবে লাগানো থাকবে। প্রতিযোগীর পায়ের ধাক্কা লেগে যেন সরে না যায। 
গোলক নিক্ষেপের কৌশল : গোলকটি হাতের তালুতে না ধরে আঙ্গুলের গোড়াসহ সম্পূর্ণ আঙ্গুলের উপর থাকবে। বুড়ো আঙ্গুল ও কনিষ্ঠ আঙ্গুল গোলকের দুদেিক একটু ছড়িয়ে থাকবে যাতে গোলকটি পড়ে না যায়। এরপর গোলকটি কাঁধের ও গলার মাঝখানে রাখতে হবে এবং হাতের কনুই কিছুটা উঁচুতে থাকবে। যেদিকে গোলকটি ছোড়া হবে তার বিপরীত দিকে মুখ করে দাঁড়াতে হবে। ডান পা সামনে ও বাম পায়ের পাতাকে পিছনে নিয়ে ডান পায়ের গোড়ালির কাছে রাখতে হবে। এরপর পাসহ শরীরকে পিছনে টেনে এনে শরীর পাশে ঘুরে আসবে।
গোলক নিক্ষেপের নিয়মাবলি : 
১. বৃত্তের মধ্যে দাঁড়াতে হবে। 
২. গোলকটি সেক্টরের মধ্যে নিক্ষেপ করতে হবে। 
৩. আটজন বা তার কম প্রতিযোগী হলে সকলে ৬টি করে নিক্ষেপ করার সুযোগ পাবে। 
৪. আটের অধিক প্রতিযোগী হলে প্রথমে ৩টি করে নিক্ষেপের সুযোগ পাবে। এখান থেকে ৮জন বাছাই করে এদেরকে আরও ৩টি নিক্ষেপের সুযোগ দিতে হবে। 
৫. নিক্ষেপের সময় স্টপ বোর্ডের উপরে স্পর্শ করা যাবে না। 
৬. গোলকটি মাটিতে না পড়া পর্যন্ত বৃত্ত থেকে বের হওয়া যাবে না। 
৭. নাম ডাকার ৯০ সেকেন্ডের ভেতর নিক্ষেপ করতে হবে। 

শারীরিক শিক্ষার  ম্যানুয়ালটির ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।
শারীরিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ম্যনুয়াল প্রশিক্ষণ কর্মশিবিরের উদ্দেশ্য প্রশিক্ষণ কর্মশিবিরের নিয়মাবলি প্রাক-মূল্যায়ন  শারীরিক শিক্ষা শিক্ষাক্রম প্রণয়ন প্রক্রিয়া শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রান্তিক যোগ্যতাসমূহ  শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের প্রান্তিক যোগ্যতা স্বাস্থ্য কী  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রদত্ত সংজ্ঞা-শারীরিক শিক্ষা কী শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা  শারীরিক শিক্ষার শিক্ষাদান পদ্ধতি শারীরিক শিক্ষা নমুনা পাঠ-পরিকল্পনা দৈনিক সমাবেশ শারীরিক শিক্ষার মূল্যায়ন শারীরিক শিক্ষার ব্যায়াম দৌড় প্রতিযোগিতার নিয়মাবলি  দীর্ঘলাফের নিয়মাবলি  উচ্চলাফের নিয়মাবলি 
Masud Rana

স্বাধীনচেতা একজন মানুষ। পেশায় একজন শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি ব্লগে লিখতে ভালোবাসে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন