৫ম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন |
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ব্রিটিশ শাসন অধ্যায়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকে আমরা ৫ম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন অনুশীলনীর প্রশ্ন উত্তর গুলো দেখবো, সেই সাথে ব্রিটিশ শাসন অধ্যায়ের অতিরিক্ত কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর ও কাঠামোবদ্ধ যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন উত্তর গুলো নিয়ে আলোচনা করব।
অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসনঅনুশীলনীর প্রশ্ন ও সমাধান
অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন অল্পকথায় উত্তর দাও :
প্রশ্ন \ ১ \ সিপাহি বিদ্রোহের পাঁচটি কারণ লেখ।
উত্তর : সিপাহি বিদ্রোহের পাঁচটি কারণ :
১. সৈন্যবাহিনীতে সিপাহি পদে ভারতীয়দের সংখ্যাধিক্য ছিলেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ৫০,০০০ ব্রিটিশ এবং ৩,০০,০০০ ভারতীয় সিপাহি ছিল।
২. ভারতের বিভিন্ন এলাকার সৈন্যদের মধ্যে সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল।
৩. ১৮৫৬ সালের পর ভারতের বাইরেও সৈন্যদের কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
৪. কামান ও বন্দুকের কার্তুজ পিচ্ছিল করার জন্য গরুর এবং শুকরের চর্বি ব্যবহারের গুজব নিয়ে ধর্মীয় অশান্তি তৈরি করা হয়েছিল।
৫. সৈন্যদের আন্দোলনকে সমর্থন জানানোর জন্য সাধারণ মানুষ প্রস্তুত ছিলেন। এই আন্দোলন দ্রæতই সৈন্যদের থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রশ্ন \ ২ \ ব্রিটিশ শাসনের দুইটি ভালো ও দুইটি খারাপ দিক উল্লেখ কর।
উত্তর : ব্রিটিশ শাসনের দুইটি ভালো দিক :
১. নতুন নতুন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়।
২. উন্নত রাস্তাঘাট, রেলপথ, টেলিগ্রাফ, প্রচলনের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়।
ব্রিটিশ শাসনের দুইটি খারাপ দিক :
১. ‘ভাগ কর শাসন কর’ নীতির ফলে এদেশে ধর্ম, বর্ণ এবং জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি হয়।
২. অনেক কারিগর বেকার ও অনেক কৃষক গরিব হয়ে যায় এবং বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।
প্রশ্ন \ ৩ \ বাংলার নবজাগরণে কারা অবদান রেখেছেন?
উত্তর : উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে। নবজাগরণের প্রধান ব্যক্তিরা হলেন- রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, নবাব আব্দুল লতিফ, সৈয়দ আমীর আলী।
অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
প্রশ্ন \ ১ \ পলাশির যুদ্ধের ফলাফল সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয় ঘটে। বাংলার শাসন ক্ষমতা ইংরেজদের হাতে চলে যায়। ইংরেজদের শাসনের নামে শোষণের সূচনা হয়। ইংরেজদের শাসনকালে প্রচুর অর্থসম্পদও এদেশ থেকে পাচার হয়ে যায়। বাংলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড কৃষি ও তাঁত শিল্প ধ্বংস হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ দুঃখ ও দুর্দশার মাঝে নিপতিত হয়।
প্রশ্ন \ ২ \ সিপাহি বিদ্রোহে বাংলার ভ‚মিকা কী ছিল?
উত্তর : ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতবর্ষকে স্বাধীন করা। প্রথম বিদ্রোহ শুরু হয় পশ্চিম বাংলার ব্যারাকপুরে সিপাহি মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে। বাংলার জনগণ এই আন্দোলনকে সমর্থন জানায় এবং বিদ্রোহের সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করে।
প্রশ্ন \ ৩ \ সাহিত্যিকগণ রাজনৈতিক আন্দোলনে কী ধরনের ভ‚মিকা পালন করতে পারেন?
উত্তর : সাহিত্যিকগণ রাজনৈতিক আন্দোলনে তাদের লেখনীর মাধ্যমে ভ‚মিকা রাখতে পারেন। নবজাগরণের তৃতীয় ধাপে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমূখ লেখকদের কবিতা, গান ও লেখার মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধিকার চেতনার প্রসার ঘটে। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া নারী শিক্ষা প্রসারে লেখনীর মাধ্যমে রাজনৈতিক আন্দোলনের ভ‚মিকা পালন করেন। পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সাহিত্যিকগণ কবিতা, গান ও লেখার মাধ্যমে রাজনৈতিক আন্দোলন করে যাচ্ছেন।